নবীজীর পিতার ইন্তেকাল: নবীজীর পিতা হযরত আব্দুল্লাহ বিবাহের কিছু দিন পর আব্দুল মুত্তালিব তাকে খেজুর আনার জন্য মদীনায় পাঠালেন। ভাগ্যের লিখন হিসাবে সেখানেই তার ইন্তিকাল হয়ে যায়।
কোনো কোনো ঐতিহাসিকগণের মতে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন। পরবর্তী এক কুরাইশি কাফেলার সাথে সিরিয়া থেকে মক্কার পথে রওয়ানা হলেন। কাফেলা যখন মদীনায় অবতরন করলো তখন তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ধীরে ধীরে রোগ বাড়তে থাকে এবং শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মদীনার নাবেগা জুদীর মাটিতে তাকে সমাহিত করা হয়।
মৃত্যুকালে হযরত আব্দুল্লাহর বয়স ছিল ২৫ বছর। তার এই মৃত্যু ছিলো নবীজী সাল্লাল্লামের শুভজন্মের আগের ঘটনা। অধিকাংশ ঐতিহাসিকগণের মত এটাই। আবার কারো কারো মতে হযরত আব্দুল্লাহ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মের দুই মাস কিংবা আরো অধিক সময় পরে ইন্তেকাল করেন। (সীরাতে মুস্তফা ১/৫৩)
নবীজীর মাতার ইন্তিকাল: বক্ষ বিদারণের ঘটনার পর দুধ মা হালিমা ভীত- সন্ত্রস্ত হয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তাঁর মমতাময়ী মা আমেনার কোলে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন। এরপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছয় বছর পর্যন্ত তাঁর মায়ের কাছেই লালিত পালিত হন।
একদিন হঠাৎ সায়্যিদা আমেনার মনে অপার্থিব মুসাফির স্বামীর স্মৃতি হৃদয়ে আঘাত করে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন ইয়াসরিবে স্বামীর কবর যেয়ারতের জন্য যাবেন। সুতরাং ইয়াতীম শিশু মুহাম্মদ এবংখাদেমা উম্মে আয়মানকে সঙ্গে নিয়ে মক্কা থেকে মদীনার পথে রওয়ানা হন। সায়্যিদা আমেনা স্বামীর কবর যিয়ারত করার পর নিজ আত্মীয় স্বজনদের সাথে মদীনায় অবস্থান করেন। এরপর মক্কার পথে যাত্রা করেন। কিন্তু পথিমধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমশ অসুস্থতার মাত্রা আরো বাড়তে থাকে। এভাবে একদিন মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি আরওয়া নামক স্থানে ইনতিকাল করেন এবং সেখানেই তাকে দাফন করা হয। ইন্নানিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। (সীরাতে মুস্তফা ১/৮৯)